ইউসুফ দিপু:  আগামী ১০ মার্চ প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপে চার বিভাগের ১২ জেলার ৮৭টি উপজেলায় অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন। ইসির ঘোষণা অনুযায়ী প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে।

এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না প্রধান বিরোধী দল বিএনপি।এমনকি তারা ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনেও অংশ নেননি।

অন্যদিকে দেশের সবচেয়ে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে আগেই ঘোষণা দিয়েছে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে একাধিক প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পাবেন। এতে দলের পক্ষ থেকে কোন বাঁধা দেওয়া হবে না।

সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিভিন্ন স্থানে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের জয়ের পথে দাঁড়িয়েছেন দলটির একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী। সেখানে দেখা যাচ্ছে নিজ দলের মধ্যেই চলবে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্ব্বিতা।

বগুড়াতেই ১২ উপজেলার মধ্যে পাঁচটিতে ক্ষমতাসীন দলের একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী এবারের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

আবার পিরোজপুরের ৭টি উপজেলায় তিন পদের বিপরীতে ৯১ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ২৭ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩৩ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩১ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র জমা দেন। তবে দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ার পরও আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এছাড়াও বিভিন্ন উপজেলায় এ ধরনের একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থীর সংখ্যা বেশি।

দলটির কর্মী-সমর্থকদের মতে চেয়ারম্যান পদে একজন প্রার্থী থাকলে জয় অনেক সহজ হতো। কিন্তু একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় কে জয়লাভ করবেন তা নিশ্চিত করে বলাটা মুশকিল। বেশিরভাগ কর্মী-সমর্থক দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করলেও অনেকেই আবার বিদ্রোহী প্রার্থীর হয়েও কাজ করছেন। এতে ভোট ভাগাভাগি হয়ে যাবে। ফলে দলীয় প্রার্থীর জয় পাওয়াটা কঠিন হয়ে পড়বে।

এদিকে, এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেতে যাচ্ছেন শতাধিক উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান। এর মধ্যে অর্ধশতাধিকই উপজেলা চেয়ারম্যান।

ভোটের মাঠে লড়াই ছাড়াই একক প্রার্থী হিসেবে তারা জয় পেতে যাচ্ছেন। এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রথম ধাপে ৩০ জন, দ্বিতীয় ধাপে অন্তত ২৫ জন, তৃতীয় ধাপে ২১ জন এবং বাকিরা চতুর্থ ধাপে একক প্রার্থী হয়েছেন। আইন অনুযায়ী তাদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে।

ইসির সংশ্লিষ্টরা জানান, বিএনপিসহ বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল এ নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় একক প্রার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। এছাড়া এবার দলীয় প্রতীকে ভোট হওয়ায় এ নির্বাচনে সার্বিকভাবে প্রার্থী সংখ্যা কমে এসেছে বলেও মনে করেন তারা।

কিছু কিছু উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বিএনপি নেতারাও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন। নির্বাচনী মাঠে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের দেখা নেই বললেই চলে। কারণ, বহিষ্কার আতঙ্কে রয়েছেন তারাও। প্রচার-প্রচারণার দিক দিয়েও এগিয়ে রয়েছেন নৌকার সকল প্রার্থীরা। তাদের জয়ের পথে বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছেন একই দলের এই বিদ্রোহী প্রার্থীরা। এ ক্ষেত্রে জয়ের পথে সদ্য বহিষ্কৃত বিএনপির প্রার্থীদের তেমন একটা সমস্যা মনে করছেন না নৌকার কর্মী-সমর্থকরা।

আগামী ১০ মার্চ প্রথম ধাপে , দ্বিতীয় ধাপে ১৮ মার্চ, তৃতীয় ধাপে ২৪ মার্চ, চতুর্থ ধাপে ৩১ মার্চ ও পঞ্চম ধাপে ১৮ জুন ভোটগ্রহণ করবে নির্বাচন কমিশন।